ঘুমানোর আগে মিল্ক্ক ক্লিনজার অথবা ফেসওয়াশ (Facewash) ব্যবহার করে ত্বক পরিস্কার করতে হবে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী টোনার ও সিরাম ব্যবহার করতে হবে। মুখে একটি ভালো মানের নাইটক্রিম, ঠোঁটে লিপ বাম, শরীরে লোশন ব্যবহার করলে ত্বক (Skin) ভালো থাকবে। শোভন সাহা, রূপবিশেষজ্ঞ নিরন্তর ছুটে চলা, কাজের মাঝে বুঁদ হয়ে ডুবে থাকার পরে শরীরে ক্লান্তি ভর করে। সারাদিন কাজের পর শরীরের মতো ত্বকও ক্লান্ত হয়ে যায়। ত্বকে জমে থাকে ধুলাবালি ও ময়লা। বাইরে থেকে এসে এবং ঘুমানোর আগে ত্বক (Skin) সঠিকভাবে পরিস্কার করতে হবে। তারপর নিয়ম মেনে সৌন্দর্যচর্চা করতে হবে।
ত্বক ভালো রাখতে ঘুমানোর আগে সৌন্দর্যচর্চা
শোভন’স মেকওভারের স্বত্বাধিকারী ও রূপবিশেষজ্ঞ শোভন সাহা জানান, ঘুমানোর আগে মুখ ভালোভাবে পরিস্কার করে নিতে হবে। শুস্ক ত্বক হলে মিল্ক্ক ক্লিনজার এবং তৈলাক্ত ত্বক হলে ফেসওয়াশ (Facewash) ব্যবহার করতে হবে। মুখ পরিস্কারের পরে ত্বকের ধরন অনুযায়ী টোনার ব্যবহার করবেন। টোনার ও সিরাম ব্যবহার করে দুই থেকে তিন মিনিট পরে নাইট ক্রিম ব্যবহার করবেন। ঠোঁটে লিপ বাম ব্যবহার করবেন। হাত-পা ভালোভাবে পরিস্কার করে তাতে বডির ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার বা বডি লোশন (Body lotion) ব্যবহার করবেন। তবে রূপবিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ত্বকে পণ্য ব্যবহার করবেন।
১। ত্বক পরিস্কার : ঘুমানোর আগে অবশ্যই ত্বক পরিস্কার করতে হবে। কখনোই মুখে মেকআপ (Makeup) রেখে ঘুমানো যাবে না। এর ফলে মুখে ব্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঠান্ডা পানি ব্যবহার করবেন। এটি অনেক সময় রিফ্রেশমেন্ট ভাব নিয়ে আসে। অবশ্যই আপনার মুখ বা ত্বকের ধরন অনুযায়ী ফেসওয়াশ (Facewash) ব্যবহার করবেন। ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে মুখে স্ট্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন।
২। ময়েশ্চারাইজার : অধিকাংশ সময় ত্বক শুস্ক হয়ে যায়। যেহেতু এখন শীতকাল, এ সময় আরও বেশি এ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। ত্বকের এই শুস্কতা দূর করতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। এটি আপনার ত্বকে যেমন সতেজ ভাব নিয়ে আসবে, তেমনি বলিরেখা (Wrinkles) দূর করতেও সাহায্য করবে।
৩। ফেসপ্যাক : ব্রণের জন্য পুদিনা পাতার ফেসপ্যাক (Facepack) বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এটি খুবই উপকারী। সমপরিমাণে পুদিনা পাতা ও নিমপাতা বেটে শুধু ব্রণ ও দাগের ওপর লাগিয়ে ঘুমান। সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন।
৪। অ্যাসট্রিনজেন্ট : যাদের ত্বক তৈলাক্ত ও ব্রণ (Acne) আছে তারা ব্যবহার করতে পারেন অ্যাসট্রিনজেন্ট। ঘরোয়া পদ্ধতিতে গোলাপজল ও শসার রসের সাহায্যে বানিয়ে নিতে পারেন অ্যাসট্রিনজেন্ট। তা ছাড়া শসার রস বরফ জমানোর পাত্রে রেখে আইস-কিউব করে নিতে পারেন এবং প্রতি রাতে মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে নিন।
৫। ফেস মাস্ক : অনেক সময় মুখে ধুলাবালু জমে, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা হারিয়ে যায়, আর্দ্রতা কমে যায়। এই উজ্জ্বলতা আবার ফিরে পেতে ফেস মাস্ক (Face Mask) ব্যবহার করতে পারেন। চন্দন ও মুলতানি মাটির ফেস মাস্ক গরমে খুব ভালো। শসার মাস্কও ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রতিদিন সম্ভব না হলে সপ্তাহে একবার হলেও ফেস মাস্ক ব্যবহার করা উচিত।
৬। চোখের যত্ন : সারাদিনের কাজের চাপে চোখ খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। অনেকের চোখে ডার্ক সার্কেল দেখা যায়। চোখের ডার্ক সার্কেল (Dark circle) কমাতে ঘুমানোর আগে শসা বা ঠান্ডা আলু বা ঠান্ডা টি-ব্যাগ চোখের ওপর দিয়ে ১০-১৫ মিনিট রাখুন। এই ডার্ক সার্কেল দূর করতে ব্যবহার করতে পারেন বাদাম তেল, অলিভ অয়েল বা নাইট ক্রিম।
৭। ঠোঁটের যত্ন : সুন্দর ঠোঁট কে না চায়! অনেক সময় সারাদিন লিপস্টিক ব্যবহারের পরে ঠোঁটে কালচে ভাব চলে আসে। তাই নরম গোলাপি ঠোঁট পেতে প্রতি রাতে ভ্যাসলিনের সঙ্গে অল্প লবণ মিশিয়ে ঠোঁটে ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিন। এতে ঠোঁটের মৃত কোষ ঝরে উজ্জ্বলতা আসবে।
৮। চুলের যত্ন : ত্বকের পাশাপাশি চুলের যত্ন (Hair Care) নেওয়াও খুব জরুরি। চুলের সব সমস্যা দূর করতে সময়ে সময়ে ম্যাসাজ করা খুবই জরুরি। এ জন্য সপ্তাহে অন্তত দু’দিন চুলে ম্যাসাজ করুন। বড় চুল হলে ঘুমানোর আগে বেণি করে নিন। তাতে চুল সারারাত ঘষা খেয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। ছোট চুল (Hair) হলে খোলা রেখে ঘুমালেও অসুবিধা নেই। তেল ম্যাসাজ করে ঘুমালে ঘুম ভালো হবে।
৯। নখের যত্ন : অনেক সময় আমাদের নখ ভেঙে যায়। তার প্রধান কারণ নখের আর্দ্রতা কমে যায়। এ সমস্যা দূর করতে বা সমস্যা কমাতে ঘুমানোর আগে হাত-পায়ের নখে অলিভ অয়েল (Olive oil) ম্যাসাজ করে নিন। সারারাত নখ আর্দ্রতা পাবে।
১০। হাত-পায়ের যত্ন : রাতে প্রথমে হাত-পা সাবান দিয়ে পরিস্কার করে নিন। দুই টেবিল চামচ কুসুম গরম অলিভ অয়েলের সঙ্গে এক চা চামচ লবণের মিশ্রণ তৈরি করে তা হাত-পায়ে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। এতে মৃত কোষ ঝরে যাবে, গোড়ালি নরম হবে, রক্ত চলাচল ভালো হবে। তার পর ধুয়ে বডি লোশন বা ময়েশ্চারাইজার (Moisturizer) লাগিয়ে শুয়ে পড়ুন।
সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কাছে কেমন লেগেছে এবং আপনার যদি কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আর আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে শেয়ার করুন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।